রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন

খালিয়াজুরীতে পল্লীবিদ্যুতের অব্যাহত লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ জনজীবন

নেএকোনা প্রতিনিধি:: নেত্রকোনা খালিয়াজুরী উপজেলাতে পল্লীবিদ্যুতের অব্যাহত লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিদ্যুতের এমন লোডশেডিংয়ের ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিটি গ্রামে ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ২ ঘণ্টারও বেশী বিদ্যুৎ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও রোগীর সেবায় ঘটছে বিভ্রান্ত।

খালিয়াজুরী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতের আওতায় খালিয়াজুরী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন ও ৫৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই ৬টি ইউনিয়নে মোট গ্রাহক সংখ্যা হচ্ছে ৮৫ হাজার। পল্লী বিদ্যুতের এই ৮৫ হাজার গ্রাহকদের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৩ থেকে ৪ মেগাওয়াট। সেখানে রাতদিন পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মাত্র এক থেকে দেড় মেগাওয়াট। ফলে খালিয়াজুরীর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষ বিদ্যুতের এমন লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ জনজীবন অতিবাহিত করছেন। যেন দেখার কেউ নেই।

গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকদের অভিযোগ, দিনরাতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। পল্লী বিদ্যুৎ এর গ্রাহক সূত্র বলছে, উপজেলা সদরে হাসপাতাল, ব্যাংক, অফিস-ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থাকায় সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ খুবই জরুরি। পল্লী বিদ্যুৎ এর এক গ্রাহক বলেন, এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। বয়স্ক লোক আর শিশুদের অবস্থা খুব খারাপ। রাতে ঘুমানো যায় না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গড়ে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না।

নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী আরেক গ্রাহক বলেন, আমাদের হাওর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে চরম বৈষম্য হচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা যেখানে বসবাস করেন তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ বেশি থাকে। অন্য জায়গাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ থাকে। একবার বিদ্যুৎ গেলে ৩-৪ ঘণ্টার আগে দেখাই মেলে না।

তিনি বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। বাচ্চাদের ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না। ঘরে অসুস্থ রোগী। খুবই কষ্ট হচ্ছে। খালিয়াজুরী বাজারের রায় মৎস্য আড়ৎ মালিক আরাধন দত্ত রায় বলেন, বিদ্যুৎ সঠিক সময়ে না থাকার কারনে বরফ পাওয়া যায় না এবং সে কারণে মাছ বাহিরে পাঠানো যাচ্ছে না। তার ফলে জেলেরা মাছের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

খালিয়াজুরী হাওড় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোঃ আনোয়ার পারভেজ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার ফলে আমাদের রোগী সেবায় বিভ্রান্ত ঘটছে। জরুরী রোগীর চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট সময় মত দেওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎতের সংশ্লিষ্ট সকলের ও কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নেত্রকোনা জেলার অন্তর্ভুক্ত খালিয়াজুরী উপজেলাতে পল্লী বিদ্যুতের লুকোচুরি মদন জোনের অধীনে খালিয়াজুড়ি সাব জোনালের এ.জি.ম গোলাম কবির জানিয়েছেন, আমাদের মদন ও খালিয়াজুরীতে ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন কিন্তু সেক্ষেত্রে খালিয়াজুরী বিদ্যুৎ ভুক্তভোগীদের পাওয়ার কথা ৩ থেকে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখানে গ্রাহকরা পাচ্ছেন মাত্র ১ থেকে দেড় মেগাওয়াট। তাই কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com